বর্তমান সময়ে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টিকটক এর জনপ্রিয়তা অতুলনীয়। বলা যায় যে, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়সী মানুষ পর্যন্ত, প্রায় সবাই এখন টিকটকে ভিডিও তৈরি করতে পছন্দ করে। মূলত এটি হলো আমাদের জন্য বিশেষ একটি বিনোদন মূলক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস। যেখানে আপনি একেবারে বিনামূল্যে মানুষের তৈরি করা এই শর্ট ভিডিও গুলোর মাধ্যমে বিনোদন উপভোগ করতে পারবেন। আর সে কারণেই বর্তমান সময়ে প্রায় লক্ষ লক্ষ মানুষ এই টিকটক নামক এন্ড্রয়েড এপস টি ব্যবহার করে আসছে। আর আজকের আর্টিকেলটি মূলত এই Tiktok অ্যাপস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আপনাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা জানতে চান যে, এই টিকটক অ্যাপস কি, কিভাবে এই Tiktok Apps কে ব্যবহার করতে হবে এবং মানুষ আসলে কিভাবে টিকটক থেকে টাকা আয় করে। তো আপনি যদি এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর জানতে চান। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল টি আপনার জন্য অনেক বেশি হেল্পফুল হবে। কারণ আজকে আমি টিকটক রিলেটেড যেসব খুটিনাটি বিষয় আছে, সেসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো। সেজন্য অবশ্যই আপনাকে আজকের এই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি টিকটক রিলেটেড সমস্ত বিষয় গুলো বুঝতে পারবেন।
টিকটক অ্যাপস কি? What is Tiktok?
সহজ কথায় বলতে গেলে টিকটক হল বিশেষ এক ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, যেখানে শুধুমাত্র ভিডিও কনটেন্ট পাবলিশ করা হয়ে থাকে। যে ভিডিও গুলো তে আপনি অন্য যেকোনো মিউজিক, সাউন্ড এর সঙ্গে নিজের অঙ্গভঙ্গি ভিডিও ধারণ করে, সেগুলো আপনি টিকটক নামক অ্যাপস এর মাধ্যমে পাবলিশ করতে পারবেন। যদিওবা ইউটিউব এর মত টিকটক একটি ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু ইউটিউব এর থেকে টিকটক এর বিশেষ কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন, ইউটিউবে আপনি অনেক দীর্ঘ ভিডিও আপলোড করতে পারবেন, কিন্তু টিকটক নামক এই অ্যাপসে আপনি শুধুমাত্র শর্ট ভিডিও পাবলিশ করতে পারবেন।
একটা বিষয় জেনে রাখা ভালো যে, টিকটক হল একটি চাইনিজ অ্যাপস। যা তৈরি করা হয়েছিল 2016 সালে। কিন্তু আজকে আমরা যে অ্যাপসটি কে টিকটক নামে চিনি, শুরুর দিকে কিন্তু এই অ্যাপসটির নাম টিকটক ছিল না। বরং যখন এই অ্যাপস টি সর্বপ্রথম লঞ্চ করা হয়েছিল, তখন উক্ত অ্যাপস এর নাম ছিল Douying. কিন্তু যখন এই অ্যাপসটি ক্রমাগত ভাবে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে, তখন এই আগের নামটাই পরিবর্তন করে নতুন নাম টিকটক হিসেবে গোটা বিশ্বের কাছে পরিচিত করা হয়। অবাক করার মত বিষয় হলো 2018 সালের অক্টোবর মাসে আমেরিকা তে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপস গুলোর মধ্যে সবার শীর্ষে ছিল টিকটক।
কিভাবে টিকটক অ্যাপস ডাউনলোড করব?
যদি আপনি একজন ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটর হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত একটি প্ল্যাটফর্ম হবে টিকটক। কেননা এখানে আপনি শর্ট ভিডিও আপলোড করে নিজের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করতে পারবেন। টিকটকে ভিডিও পাবলিশ করার জন্য আপনার ভিডিও এর দৈর্ঘ্য কমপক্ষে তিন সেকেন্ড থেকে শুরু করে 15 সেকেন্ড এবং তিন সেকেন্ড থেকে শুরু করে 60 সেকেন্ড পর্যন্ত দীর্ঘ ভিডিও আপলোড করতে পারবেন। তবে এখন অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে থাকতে পারে যে, টিকটক এ ভিডিও আপলোড করার আগে কিভাবে সেই টিকটক অ্যাপস ডাউনলোড করব।
তো যদি আপনার মনে এই প্রশ্নটি জেগে থাকে, তাহলে আপনাকে বলবো যে আপনি চাইলে খুব সহজেই আপনার ডিভাইসে টিকটক অ্যাপস ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। সেজন্য আপনাকে যেতে হবে গুগল প্লে স্টোরে, যখন আপনি গুগল প্লে স্টোরে যাবেন। তখন Tiktok লিখে সার্চ করলেই সেখান থেকে আপনি সরাসরি আপনার ফোনে এই জনপ্রিয় অ্যাপসটি ইন্সটল করে নিতে পারবেন। এর পাশাপাশি গুগলে এমন অনেক ধরনের ওয়েবসাইট আছে, যে ওয়েবসাইট গুলো থেকে আপনি খুব সহজেই টিকটক নামক এই জনপ্রিয় অ্যাপস ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
কিভাবে টিকটক অ্যাপস ব্যবহার করবো?
যদিওবা টিকটক অ্যাপস ব্যবহার করা খুব সহজ একটি কাজ। তবে যারা এর আগে কখনো টিকটক অ্যাপস ব্যবহার করেনি, তাদের কাছে এই অ্যাপস টি ব্যবহার করা একটু কঠিন মনে হতে পারে। তবে আপনি কিভাবে টিক টক অ্যাপস অ্যাপস ব্যবহার করবেন, সে নিয়ে এবার আমি ধাপে ধাপে আলোচনা করব। এবং আপনি যদি সেই ধাপ গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করতে পারেন। তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার ফোনে থাকার টিকটক অ্যাপসটি ব্যবহার করতে পারবেন। তো চলুন এবার সেই ধাপ গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- তো সবার আগে আপনাকে আপনার ফোনে থাকার টিকটক অ্যাপস টি ওপেন করতে হবে। এবং যখন আপনি আপনার Tiktok অ্যাপস টি ওপেন করবেন, তখন সরাসরি কিছু ভিডিও দেখতে পারবেন।
- এখন আপনি সবার নিচে ডান পাশে একটি প্রোফাইল আইকন দেখতে পারবেন, আপনাকে সেই আইকনে ক্লিক করতে হবে।
- তো যখন আপনি সেই প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করবেন, তখন আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে। আপনি চাইলে আপনার ফেসবুক কিংবা গুগল একাউন্টের মাধ্যমে খুব সহজেই একটি টিকটক একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
- যখন আপনি সঠিক ভাবে আপনার টিকটক একাউন্ট তৈরি করবেন। তখন আপনি সেই একাউন্ট থেকে নিজের টিকটক ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এবং সেগুলো টিকটক অ্যাপস এ পাবলিশ করতে পারবেন।
- সেজন্য আপনি টিকটক অ্যাপস এর সবার নিচে মাঝখানে একটি প্লাস আইকন দেখতে পারবেন। আপনি যখন সেই প্লাস আইকনে ক্লিক করবেন, তখন আপনার নিজের তৈরি করা টিকটক ভিডিও আপলোড করতে পারবেন। এবং প্রয়োজনে সেই অপশনে গিয়ে সরাসরি অ্যাপসের মাধ্যমে টিকটক ভিডিও তৈরি করে নিতে পারবেন।
আসলে টিকটক অ্যাপস ব্যবহার করা খুব সহজ, আর আপনি যদি উপরের ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করেন। তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার ফোনে ইন্সটল থাকা টিকটক অ্যাপসটি ব্যবহার করতে পারবেন।
টিকটক অ্যাপস থেকে আয় করা সম্ভব?
এবার অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগে থাকতে পারে যে, আপনি যদি টিকটক এ ভিডিও পাবলিশ করেন। তাহলে কি সেই ভিডিওর মাধ্যমে টিকটক থেকে আয় করতে পারবেন। তো যদি আপনার মনে ধরনের প্রশ্ন জেগে থাকে, তাহলে আমি আপনাকে বলবো যে, হ্যাঁ আপনি চাইলে টিকটক এ ভিডিও পাবলিশ করে টাকা আয় করতে পারবেন। কারণ টিকটক থেকে টাকা আয় করার বিভিন্ন রকম মাধ্যম আছে, যে মাধ্যম গুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই অন্যদের মতো প্রচুর পরিমাণ টাকা টিকটক থেকে আয় করে নিতে পারবেন। একটা কথা জেনে রাখা ভালো যে, টিকটক থেকে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো কয়েন। অর্থাৎ আপনার একাউন্টে যত বেশি কয়েন জমা হবে আপনি তত বেশি টাকা আয় করতে পারবেন।
তবে আপনি যদি টাকা আয় করার জন্য ফেসবুক কিংবা ইউটিউব এর সাথে টিকটক এর তুলনা করেন, তাহলে আমি বলব যে ফেসবুক কিংবা ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য বিভিন্ন রকমের মাধ্যম আছে। যেমন, আপনি তাদের পার্টনার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে তাদের প্লাটফর্মে ভিডিও পাবলিশ করে টাকা আয় করতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি সেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করে টিকটক থেকে আয় করতে চান, তাহলে আমি বলব যে আপনি কোনো ভাবেই ইউটিউব কিংবা ফেসবুকের মত পার্টনার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে টিকটক থেকে আয় করতে পারবেন না। কারণ টিকটকের এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পার্টনার প্রোগ্রাম এর পদ্ধতি চালু করেনি। তবে হ্যাঁ! আপনি যদি নিজের পরিচিতি সবার মধ্যে তুলে ধরতে চান, নিজেকে একজন সেলিব্রেটি হিসেবে দেখতে চান, তাহলে টিকটক হবে আপনার জন্য অন্যতম একটি প্ল্যাটফর্ম।