এই পোষ্টের আলোচনার বিষয়াবলী রিটার্নিং অফিসারের কাজ কি, দায়িত্ব ও রিটার্নিং অফিসার হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে।
এই মুহূর্তে আমাদেরক দেশে ভোটারের কসংখ্যা প্রায় নব্বই কোটি। এই কবিপুল সংখ্যক জনগণের রায়ে কনির্বাচিত হয় দেশের সরকার। কতাই এই বড় কর্মযজ্ঞ ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন ককরতে দরকার বিপুল কনির্বাচনী কর্মকর্তার।
আজকে আমরা জানবো করিটার্নিং অফিসার নিয়ে বিশদ কযত তথ্য। ধাপে ধাপে আমরা কজানতে পারবো রিটার্নিং অফিসার কি? রিটার্নিং অফিসারের কাজ কি? রিটার্নিং অফিসার হতে কী কী যোগ্যতা অর্জন করতে হয়।
রিটার্নিং অফিসার কি
অভিধানে রিটার্নিং অফিসার এর সংজ্ঞা: রিটার্নিং অফিসার বি. নির্বাচনে নির্দিষ্ট এলাকার আধিকারিকবিশেষ। [ইং. returning officer]। নির্বাচন তত্ত্বাবধান, এবং ফল প্রকাশে দায়িত্ব পালনকারী অফিসারকে রিটার্নিং অফিসার বলে। রিটার্নিং অফিসার নির্বাচন পরিচালনা ককরেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার কজেলা প্রশাসক হয়ে থাকেন।
রিটার্নিং অফিসারের সংজ্ঞা কনির্ধারণ করতে গিয়ে আরপিও’র ২ ধারায় বলা হয়েছে- ”রিটার্নিং অফিসার হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যাকে আরপিও’র ৭ ধারা মোতাবেক ওই পদে নিয়োগ দেয়া হয় এবং রিটার্নিং অফিসারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনকারী একজন সহকারী রিটার্নিং অফিসারও এর অন্তর্ভুক্ত হবেন। নির্বাচন তত্ত্বাবধান, এবং ফল প্রকাশে দায়িত্ব পালনকারী অফিসার।”
রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব
নির্বাচন খকার্যে রিটার্নিং অফিসারের গুরুত্বপূর্ণ খভূমিকা রয়েছে।তার সুষ্ঠু পরিচালনায় খনির্ভর করছে সুষ্ঠু নির্বাচনের এক বিশেষ দিক।
আরপিওতে রিটার্নিং অফিসারের খক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা খরয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হল:
১) সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য খরিটার্নিং অফিসার আরপিও এবং এর অধীনে %প্রণীত বিধিমালায় প্রদত্ত ক্ষমতা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সব কিছু করবেন।
২) কমিশনের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে রিটার্নিং %অফিসার তার জেলায় নির্বাচন পরিচালনার কাজ তদারকি করবেন এবং কমিশন %প্রদত্ত অন্যান্য দায়িত্ব পালন ও %কাজ সম্পাদন করবেন।
৩) তার জেলার সরকারি ও বেসরকারি %অফিস, প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানরা কর্তৃক সরবরাহকৃত %অফিসার ও কর্মচারীদের নামের তালিকা থেকে প্রিসাইডিং অফিসার, %সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসারদের প্যানেল প্রস্তুত করবেন এবং %সে প্যানেল থেকে প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রের জন্য %একজন প্রিসাইডিং অফিসার এবং প্রয়োজনীয় %সংখ্যক সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার %ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দেবেন।
তিনি %কারণ লিপিবদ্ধ করে যে কোনো %ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী %প্রিসাইডিং অফিসার বা পোলিং অফিসারকে সাময়িকভাবে %কর্মচ্যুত করতে এবং কর্মচ্যুত কর্মকর্তার %কার্যাবলী সম্পাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে %পারবেন।
৪) রিটার্নিং অফিসার %কমিশন নির্ধারিত তারিখে অনুষ্ঠেয় %সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে %ইচ্ছুক প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও বাছাই %করবেন। তিনি যৌক্তিক কারণে –কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল –করতে পারবেন।
যে কোনো একজন প্রার্থী রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে –কমিশনে আপিল করতে পারবেন এবং কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য –হবে।
৫) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য নির্ধারিত তারিখের পরদিন রিটার্নিং অফিসার তার –জেলার সংসদীয় আসনগুলোর প্রত্যেক আসনের –বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত –ও প্রকাশ করবেন।
৬) আরপিও এবং –এর অধীনে প্রণীত বিধিমালা অনুসরণে রিটার্নিং অফিসার বৈধ –প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ করবেন।
৭) তার নিয়ন্ত্রণাধীনগ এলাকায় প্রতিটি সংসদীয় গআসনে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীর ও অন্যান্য প্রার্থীর গপ্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা উল্লেখপূর্বক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবেন গএবং নির্ধারিত ফরমে কমিশনের কাছে গসমন্বিত বিবরণী প্রেরণের ব্যবস্থা নেবেন।
রিটার্নিং অফিসার হওয়ার যোগ্যতা
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এ জাতীয় গসংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার গও সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে গকাকে নিয়োগ দেয়া হবে, গসে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে কিছু গবলা না থাকলেও কমিশন কর্তৃক জেলা গপ্রশাসককে (ডিসি) রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা গনির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) সহকারী রিটার্নিং গঅফিসার নিয়োগ প্রদান একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। তাদের গজ্ঞান ও অভিজ্ঞতাই এ দায়িত্ব পালনে তাদের অনেকটা অপরিহার্য করে তুলেছে। প্রশাসন ক্যাডারের উপসচিবদের মধ্য থেকে ডিসি এবং সিনিয়র স্কেলপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ইউএনও হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
বাংলাদেশের সংবিধানে বলা হয়েছে, জাতীয় গসংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা গপ্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং গনির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত থাকবে এবং কমিশন সংবিধান ও আইনানুযায়ী সংসদ গসদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে [অনুচ্ছেদ ১১৯(১)]। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে গবলা হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনাসহ কমিশনের অন্যসব দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা গসব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হবে। আরপিও’র ৫(২) ধারায় সংবিধানের এ নির্দেশনার প্রতিফলন ঘটেছে।
এ ধারায় বলা হয়েছে, সব গনির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হবে নির্বাচন গকমিশনকে তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা এবং সংবিধানের এ গনির্দেশনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপতি কমিশনের সঙ্গে আলোচনা গকরে প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করবেন। সংবিধান জাতীয় সংসদ গনির্বাচনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত গকরলেও কমিশনের পক্ষে এ নির্বাচন পরিচালনা করে মূলত গমাঠ প্রশাসন। আর নির্বাচন পরিচালনার গমূল ক্ষমতা থাকে রিটার্নিং এজেন্ট এর হাতে।
তবে এ ব্যবস্থায় গসংশোধন আনার জন্য কয়েকটি রাজনৈতিক গদল, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের একটি অংশ ইতোমধ্যে প্রস্তাব করেছে।