যদি আপনি একজন বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন। তাহলে আপনি অবশ্যই জেনে থাকবেন যে, বাংলাদেশে বসবাস করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র আপনার পরিচয় বহন করবে। অর্থাৎ আপনি বাংলাদেশে বাস করছেন, আপনি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। সেটি প্রমাণ করার জন্য আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করতে হবে। আর সে কারণেই বর্তমান সময়ে প্রতিটা নাগরিকদের 18 বছর পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথেই একটি করে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়ে থাকে। এবং পরবর্তী সময়ে এই জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে সেই ব্যক্তি তার নিজের পরিচিতি বহন করে। সে কারণে একটি জাতীয় পরিচয় পত্র কে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি Nid সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন। মূলত এই জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে আমাদের অনেক মানুষের মনে নানা ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু আমরা সেই প্রশ্ন গুলোর সঠিক উত্তর এখন পর্যন্ত জানতে পারেননি। তো এমন কিছু প্রশ্ন নিয়ে আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে। মূলত আমি লক্ষ্য করে দেখলাম যে আমাদের দেশের প্রায় অনেক মানুষ এই জাতীয় পরিচয় পত্র (Nid) নিয়ে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন গুগলে সার্চ করে। তবে এই সবগুলো প্রশ্নের মধ্যে কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর বাংলা ব্লগ বা ওয়েব সাইট গুলোতে রয়েছে। আবার কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর এই ধরনের ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর মধ্যে নেই।
তো সেই কারণে আমি চিন্তা করলাম যে আমার নতুন একটা আর্টিকেলে Nid সম্পর্কিত যে প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। যে প্রশ্ন গুলোর উত্তর এখন পর্যন্ত গুগলে সঠিক ভাবে পাওয়া যায় না। সেই প্রশ্ন গুলো কে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার সেজন্য আমি প্রথমত সেই প্রশ্ন গুলো কে সংগ্রহ করেছি। এবং এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি চেষ্টা করব সেই সব গুলো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার। আর আপনি যদি সেই অজানা বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিতে চান তাহলে চেষ্টা করবেন আজকের পুরো আর্টিকেল টি মনোযোগ সহকারে পড়ার। আর দেরি না করে চলুন সরাসরি মূল আলোচনায় ফিরে যাওয়া যাক।
Q. নতুন Nid Card করার জন্য কি কি প্রয়োজন হয়ে থাকে?
আমরা যারা নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করতে চাচ্ছি। তাদের অধিকাংশ মানুষের মনে একটি প্রশ্ন জেগে থাকে। আর সেটি হল যে, নতুন এনআইডি কার্ড করার জন্য আসলে কি কি প্রয়োজন হয়ে থাকে। যদি আপনার মনে সেই প্রশ্নটি জেগে থাকে তাহলে আমি আপনাকে বলবো যে, নতুন একটি জাতীয় পরিচয় পত্র (Nid) তৈরি করার জন্য বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। যেমন:
- আপনার এসএসসি কিংবা এইচএসসি এর সম্মানের সার্টিফিকেট এর ফটোকপি।
- আপনার জন্ম নিবন্ধন অথবা জন্ম সনদ এর ফটোকপি।
- যদি আপনার পাসপোর্ট থাকে, তাহলে পাসপোর্ট এর ফটোকপি। কিংবা আপনার যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা টিন সার্টিফিকেট থাকে। তাহলে আপনাকে এর ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
- আপনার পিতা অথবা আপনার মাতা কিংবা আপনার স্ত্রীর আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- ইউটিলিটি বিলের কপি প্রদান করতে হবে।
- কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার নাগরিকত্ব সনদ প্রয়োজন হবে।
তো যাদের মনে প্রশ্ন ছিল যে একটি নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র করার জন্য আসলে কি কি প্রয়োজন হয়। তাদের উপরোক্ত ডকুমেন্টস গুলো প্রয়োজন হবে।
Q. নতুন ভোটার আইডি কার্ড (Nid) করার নিয়ম কি?
যদি আপনার বয়স 18 বছর হয় কিংবা 18 বছরের বেশি হয়ে থাকে। তাহলে কিন্তু আপনাকে অবশ্যই নতুন জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে। আর বর্তমান সময়ে আপনি চাইলে অনলাইন পদ্ধতি অনুসরণ করে নিজের ঘরে বসে নতুন ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সে জন্য প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিস এর মূল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এবং সেখানে গিয়ে আপনাকে বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হবে। আর আপনি যদি সেই ধাপ গুলো সঠিক ভাবে অতিক্রম করতে পারেন। তাহলে কিন্তু আপনি নিজের ঘরে বসে নতুন জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যদি আপনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিস এর মূল ওয়েবসাইট খুঁজে না পান। তাহলে আপনাকে এই লিঙ্কে প্রবেশ করতে হবে। Link: https://services.nidw.gov.bf/nid-pub/
Q. আমি কিভাবে স্মার্ট কার্ড পাবো?
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা মূলত এখন পর্যন্ত এ স্মার্ট কার্ড হাতে পাইনি। তো যে মানুষগুলো এখন পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড পায়নি, তারা আসলে কতদিন পর এই স্মার্ট কার্ড হাতে পাবে। সেটা খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন। সেজন্য প্রথমে এই লিঙ্কে (https://services.nidw.gov.bd/voter_center) প্রবেশ করতে হবে। এবং যখন আপনি এই লিংকে প্রবেশ করবেন। তখন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। আর যখন আপনি সেই তথ্য গুলো সঠিক ভাবে প্রদান করবেন। ঠিক তখনই আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে যে, আপনি আসলে কতদিন পর স্মার্ট কার্ড হাতে পাবেন। কিন্তু যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের স্মার্ট কার্ড এর তারিখ নির্ধারণ করা না হয়। তাহলে আপনাকে পরবর্তী সময়ে পুনরায় অনুসন্ধান করার জন্য বলা হবে।
Q. জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য কিভাবে সংশোধন করা যায়?
যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে তথ্য গুলোর মধ্যে কোন প্রকার ভুল থাকে। তাহলে অবশ্যই আপনাকে সেই তথ্য গুলো সংশোধন করে নিতে হবে। এবং আপনি যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে থাকা ভুল তথ্য কে সংশোধন করতে চান। তাহলে আপনাকে এনআইডি রেজিস্ট্রেশন উপজেলা / থানা কিংবা জেলার নির্বাচন অফিসে যেতে হবে। এবং সেখানে গিয়ে আপনাকে যাবতীয় কাজ করতে হবে।
Q. জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুলক্রমে পিতা / স্বামী অথবা মাতা কে যদি মৃত দেখানো হয় সেক্ষেত্রে কি করবো?
কোন কারনে যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে আপনার নিজের পিতা / স্বামী অথবা মাথাকে মৃত দেখানো হয়। সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে দ্রুততার সাথে সেই জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করে নিতে হবে। তবে আপনি যদি এই সংশোধন করার কাজটি করতে চান, তাহলে আপনাকে যে ব্যক্তি কে মৃত দেখানো হয়েছে। সেই ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
Q. আমি অবিবাহিত কিন্তু আমার জাতীয় পরিচয় পত্রের পিতা না লিখে স্বামীর নাম লেখা হয়েছে এখন আমি কি করবো?
অনেক সময় জাতীয় পরিচয় পত্র বেশ কিছু ভুল হয়ে থাকে। তবে সেই ভুল গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ভুল হল, একটি মেয়ে অবিবাহিত। অথচ সেই মেয়েটির জাতীয় পরিচয় পত্রের পিতার নামের জায়গায় তার স্বামীর নাম লেখা হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি এরকম কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। তাহলে আপনাকে অতি দ্রুততার সাথে এই ভুলটি সংশোধন করে নিতে হবে। এবং আপনি যদি এই ভুলটি সংশোধন করতে চান। তবে আপনাকে অবিবাহিত এর তথ্য প্রমাণসহ নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
Q. আমার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। এখন কিভাবে আমি আমার স্বামীর নাম Nid Card থেকে বাদ দিবো?
অনেক সময় কিছু কিছু মানুষের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে যখন তাদের বিবাহ সংঘটিত হয়েছিল, তখন তারা তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের স্বামী এবং স্ত্রীর নাম উল্লেখ করেছিল। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পরে তাদের স্বামী অথবা স্ত্রীর নাম বাদ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে। সেই ক্ষেত্রে আপনি যদি এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। তাহলে আপনাকে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার কাবিননামা নিয়ে নির্বাচন কমিশন অফিসে যেতে হবে। এবং তাদেরকে যখন আপনি আপনার সমস্যার কথা বলবেন। তখন তারা আপনাকে পরবর্তী ধাপ গুলো বুঝিয়ে বলবে।