বাংলাদেশে বসবাস করা একজন মানুষের বৈধতা প্রমাণ করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হয়ে থাকে। কেননা যখন আপনাদের নিকট জাতীয় পরিচয় পত্র থাকবে, তখন আপনি উক্ত দেশের একজন বৈধ নাগরিক বলে বিবেচিত হবেন। আর সে কারণেই মূলত আমাদের বাংলাদেশে ১৬ বছরের বেশি বয়স হলে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করার সুযোগ প্রদান করা হয়ে থাকে। এবং বর্তমান সময়ে আপনি এই প্রক্রিয়াটি অনলাইন এর মাধ্যমে সম্পন্ন করে নিতে পারবেন।
তবে এই জাতীয় পরিচয় পত্র যেমন একজন নাগরিকের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ঠিক তেমনিভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে আমাদের অনেকের মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে যখন আমরা google এর মধ্যে সেই প্রশ্নগুলো লিখে সার্চ করি। তখন গুগল থেকে এই ধরনের প্রশ্নের সঠিক উত্তর গুলো পাওয়া যায় না। যে কারণে আমাদের কে বেশ দ্বিধার মধ্যে পড়ে যেতে হয়।
তবে আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে উত্তর খুঁজে না পাওয়া সেই প্রশ্ন গুলো কে সংগ্রহ করেছি। এবং আজকের এই আর্টিকেলে আমি সেই সব গুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। তো আপনার মনে যদি জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে কোনো ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল টি আপনার জন্য অনেক বেশি হেল্পফুল হবে। তাই চেষ্টা করবেন আজকের এই পুরো আর্টিকেল টি মনোযোগ দিয়ে পড়ার।
একটি জাতীয় পরিচয় পত্র কতবার সংশোধন করা যায়?
যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে কোনো ভুল তথ্য থাকে। তাহলে আপনি খুব সহজেই অনলাইন এর মাধ্যমে সেই ভুল থাকা তথ্যকে সংশোধন করে নিতে পারবেন। তবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসের নিয়ম অনুযায়ী। আপনি একটি জাতীয় পরিচয় পত্র শুধুমাত্র একবার সংশোধন করে নিতে পারবেন। তবে আপনার এই সংশোধন প্রক্রিয়া যদি যুক্তিসম্পন্ন না হয়। সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনার কোন সংশোধন গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।
আমার জাতীয় পরিচয় পত্র তে থাকা জন্ম তারিখ যথাযথ নয়, এখন কি করতে হবে?
যদি এমনটা হয়ে থাকে যে, আপনি জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন করার সময় আপনার যে জন্ম তারিখ প্রদান করেছেন। সেটি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে প্রিন্ট করা হয়নি, এবং প্রিন্ট করা হলেও সেখানেই ভুল তারিখ প্রদান করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে অতি দ্রুত সেই ভুল তথ্য থাকা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করে নিতে হবে।
আর এই কাজটি করার জন্য আপনাকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কিংবা জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে যেতে হবে। এবং তাদের কে আপনার সমস্যার কথা জানাতে হবে। যখন আপনি তাদেরকে আপনার সমস্যার কথা জানাবেন। তখন তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র এর মধ্যে থাকা স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে হলে কি করব?
যদি কখনো কোন সময় আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এর মধ্যে থাকা স্বাক্ষর পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাহলে আপনাকে নতুন স্বাক্ষর এর নমুনা সহ গ্রহণযোগ্য প্রমাণপত্র পুনরায় আবেদন করতে হবে। কিন্তু একটা কথা অবশ্যই আপনার জেনে রাখা উচিত যে, আপনি শুধুমাত্র একবার আপনার স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে পারবেন।
কিভাবে আমার জাতীয় পরিচয় পত্র এর মধ্যে থাকা ছবি পরিবর্তন করব?
যখন আপনি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা ছবি পরিবর্তন করতে চাইবেন। তখন কিন্তু আপনাকে 230 টাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি পরিবর্তন করার জন্য প্রদান করতে হবে। এবং সেই সাথে আপনাকে অনলাইনে মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
যখন আপনার এই অনলাইন আবেদন যথাযথ বলে গণ্য করা হবে। তখন আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে তাদের অফিসে ডাক দেয়া হবে। এবং যখন আপনি তাদের অফিসে যাবেন, তখন পুনরায় আপনার ছবি তুলে নতুন ভাবে আপনার সেই ছবি জাতীয় পরিচয় পত্র এর সাথে যুক্ত করা হবে।
ভুল করে একাধিক জায়গায় জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করলে কি করতে হবে?
কোন কারণে যদি আপনি এক বা একাধিক জায়গায় আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করে থাকেন। সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে যেকোনো একটি জায়গা থেকে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন ডিএক্টিভ করতে হবে। আর এই কাজটি করার জন্য আপনাকে নির্বাচন কমিশন অফিসে যেতে হবে।
এরপর আপনি যে জায়গা থেকে জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন ডিএক্টিভ করতে চান। সেটি তাদেরকে জানিয়ে দিতে হবে। এবং যখন আপনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন। তখন তারা আপনার উক্ত জায়গা থেকে জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন ডিএক্টিভ করে রাখবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র এর তথ্য ও সংশোধন করার জন্য কত টাকা দিতে হয়?
যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে কোন প্রকার ভুল থাকে। তাহলে আপনাকে সেই ভুল থাকা তথ্যেকে সংশোধন করে নিতে হবে। তবে আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে এই সংশোধন করার কাজ করতে চান। তাহলে আপনাকে ২৩০ টাকা প্রদান করতে হবে। এবং এই টাকা আপনি রকেট এর মাধ্যমে কিংবা ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্রে থাকা তথ্যে ভুল থাকলে কিভাবে সংশোধন করতে হবে?
কখনো যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এর মধ্যে থাকা তথ্যে ভুল থাকে। তবে আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে সেই ভুল তথ্য গুলোকে সংশোধন করে নিতে পারবেন। কিংবা আপনি চাইলে নির্বাচন কমিশন অফিস এর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার মাধ্যমে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে থাকা ভুল তথ্য সংশোধন করে নিতে পারবেন।
কোন কারনে জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে করণীয় কি?
যদি কোন দুর্ঘটনা বশত আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি হারিয়ে যায়। তাহলে আপনাকে অতি দ্রুততার সাথে থানায় একটি সাধারণ জিডি করতে হবে। এরপরে আপনাকে আপনার হারিয়ে যাওয়া জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য রি ইস্যু করতে হবে। যখন আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে যাওয়ার পর পুনরায় রি ইস্যু করবেন। তখন আপনাকে নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে। এবং এই সব কিছুর পরে পরবর্তী 7 থেকে 10 কার্যদিবসের মধ্যে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি জেনারেট হয়ে যাবে।
বিয়ের পর কিভাবে স্বামীর নাম জাতীয় পরিচয় পত্রে লিপিবদ্ধ করব?
যদি আপনি বিয়ের আগেই জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য নিবন্ধন করে থাকেন। সেক্ষেত্রে বিয়ের পরে আপনাকে পুনরায় আপনার সেই জাতীয় পরিচয় পত্রে আপনার স্বামীর নাম উল্লেখ করতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে আপনার বিয়ের কাবিন নামা সহ পর্যাপ্ত প্রমাণ নিয়ে আপনাকে পুনরায় জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে হবে। এবং আপনি যে আপনার স্বামীর নাম আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে দিতে চান। সেটিও আপনাকে উল্লেখ করতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে পেশা পরিবর্তন করার জন্য কি করব?
যদিও বা একটি জাতীয় পরিচয় পত্রের মধ্যে কোন প্রকার পেশার উল্লেখ থাকে না। তবে আপনি যদি জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্যে থাকা পেশা পরিবর্তন করতে চান। সেক্ষেত্রে আপনাকে আবেদন করতে হবে। এবং আপনার আবেদন যদি যথাযথ বলে গণ্য করা হয়। তাহলে নির্বাচন কমিশন কর্তৃপক্ষ আপনার পেশা পরিবর্তন করে দিবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, জাতীয় পরিচয় পত্র আমাদের সবার জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। আর এই প্রয়োজনীয় বিষয়টি নিয়ে আমাদের মনে নানা রকমের প্রশ্ন রয়েছে। যে প্রশ্ন গুলোর সঠিক উত্তর খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। আর আজকের আর্টিকেলে আমি সেই সকল প্রশ্ন গুলোকে একত্রে করেছি। এবং সেই সাথে এই প্রশ্ন গুলোর সঠিক উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি।