9আপনি কি হার্টের সমস্যা নিয়ে বিভ্রান্তিতে ভুগছেন তাহলে ‘হার্ট দুর্বল লক্ষণ’ সম্বলিত এই পোষ্টটি আপনার জন্য এবং আপন সঠিক জায়গায় এসেছেন। নিম্নোক্ত লক্ষণগুলো যদি আপনার কাছে থাকে তবে দেরী না করে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। পোষ্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনুরোধ রইলো। চলুন পড়া শুরু করি এখান থেকেই।
হার্ট দুর্বল লক্ষণ
[ads1]
কার্ডিওমায়োপ্যাথির প্রাথমিক পর্যায়ে একজন ব্যক্তি নিম্নক্ত লক্ষণ বা উপসর্গ অনুভব করতে পারেন। যেমন:
- বুকে অস্বস্থি
- অনিয়মিত হৃদস্পন্দন/ শ্বাস
- শক্তির অভাব
- সহজেই ক্লান্ত হওয়া
- অনিয়ন্ত্রিত ঘন ঘন কাশি
- হালকা মাথা ব্যথা/ ঘোরা লেগে থাকা
- বাহুতে ব্যাথা অনুভব করা
- পরিশ্রমের বা বিশ্রামের সময় শ্বাসকষ্ট
- পা, গলা, চোয়াল প্রায়ই ব্যাথা অনুভব করা
- মাঝে মাঝে অজ্ঞান ভাব
- অস্বস্তি বা বুকে চাপ চাপ ব্যাথা
- পেটে তরল জমা হওয়ার কারণে পেট ফুলে যাওয়া
পেটে তরল জমা হয়ে ফুলে যাওয়া
হার্টের অসুস্থ ব্যাক্তি অন্যান্য লক্ষণের সাথে সাথে তরল জমে পেট ফুলে যাওয়ার মতো আবয়ব হতে পারে। এ সময় সে তার তলপেট স্বাভাবিকের চেয়ে চাপ অনুভব করে। হাটতে, চলতে, ফিরতে অস্বস্থি অনুভব হতে পারে।
পরিশ্রম বা বিশ্রামের সময় শ্বাসকষ্ট
[ads2]
হার্ট দুর্বল লক্ষণ এর অন্যতম একটি লক্ষণ হলো অল্প একটু পরিশ্রমেই শ্বাসকষ্ট বোধ করা। একটু চাপের কাজ করতে গেলেই শ্বাস অস্বাভাবিক এবং অনিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। বিশ্রাম অবস্থায় শ্বাস নিতে যেন স্বাভাবিকের চেয়ে কষ্ট হয়।
বুকে অস্বস্তি
এটি হার্টের বিপদের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। আপনার যদি ধমনী অবরুদ্ধ থাকে বা হার্ট অ্যাটাক হয় তবে আপনি বুকে ব্যথা, টান বা চাপ অনুভব করতে পারেন।অনেকে এই অনুভূতিকে নানানভাবে সংজ্ঞায়িত করেন । কিছু লোক বলছে, যেন মনে হয় এটি একটি হাতি তাদের বুকের উপর বসে আছে। অনুভূতি সাধারণত কয়েক মিনিটের বেশি সময় ধরে থাকে। যখন আপনি বিশ্রামে থাকেন বা যখন আপনি শারীরিক কিছু করছেন তখন এটি ঘটতে পারে।
এছাড়াও, আরেকটি বিষয় মনে রাখবেন হার্ট অ্যাটাক কিংবা বুকে ব্যথা ছাড়াও আপনার হৃদরোগ হতে পারে। এটি মহিলাদের মধ্যে বিশেষভাবে প্রচলিত।
বমি বমি ভাব, বদহজম, বুকজালা, পেটে ব্যথা
কিছু লোকের হার্ট সমস্যা হলে এই লক্ষণগুলো থাকতে পারে। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ধরণের লক্ষণগুলি প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অবশ্যই, অনেক কারণেই আপনার পেট খারাপ হতে পারে যা আপনার হার্টের সাথে সাথে কোন সম্পর্ক নেই। তবে যদি মাঝে মাঝেই এইরকম অনুভব করেন তবে অবশ্যই একজন হার্ট বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর সাথে আলাপ করে নিবেন।
বাহুতে ছড়িয়ে পড়া ব্যথা
হার্ট সমস্যার আরেকটি ক্লাসিক উপসর্গ হল ব্যথা যা শরীরের বাম পাশ দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এটি প্রায়ই বুক এর বাম পাশ থেকে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
মাঝে মাঝেই মাথা ঘোরা কিংবা ব্যাথা অনুভব করা
[ads2]
ক্ষেত্রবিশেষে আপনার ভারসাম্য হারিয়ে যেতে পারে এবং আপনি অজ্ঞান হতে পারেন। দ্রুত উঠে দাড়াতে গেলে মাথা ব্যাথা কিংবা ঘোরা অনুভব হতে পারে। এমন ও মনে হতে পারে কেউ যেন মাথায় বাড়ী দিচ্ছে এবং এটি পূনরাবৃত্তি হচ্ছে। কিন্তু যদি আপনি হঠাৎ অস্থির বোধ করেন এবং আপনার বুকে অস্বস্তি বা শ্বাসকষ্টও হয়, তাহলে সাথে সাথেই ডাক্তার এর সন্নিকটে চলে যান
গলা বা চোয়ালের ব্যথা
সাধারণভাবে গলা বা চোয়ালের ব্যথাকে আমরা এটাকে ঠান্ডা বা সাইনাসের সমস্যা ধারা সৃষ্ট মনে করি এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এটাই হয়। কিন্তু যদি ও গলা বা চোয়ালের ব্যথা সম্ভবত হৃদয় সম্পর্কিত নয়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এটি একটি পেশীবহুল সমস্যা, ঠান্ডা বা সাইনাসের সমস্যা দ্বারা সৃষ্ট। কিন্তু যদি আপনার বুকের মাঝখানে ব্যথা বা চাপ থাকে যা আপনার গলা বা চোয়ালের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে এটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। তাই এই বিষয়ে ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
সহজেই ক্লান্ত হয়ে যাওয়া
যদি এমন হয় যে কোনো কাজ স্টার্ট করা মাত্রই আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং চরম ক্লান্তি বা অব্যক্ত দুর্বলতার সহিত খুব দ্রুত শ্বাস নিচ্ছেন তবে এটিও হতে পারে হার্টের সমস্যার একটি লক্ষণ। যেমন সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে গেলেই আপনি অনুধাবণ করতে পারবেন।
অনাকাঙ্খিত নাক ডাকা যা হার্ট দুর্বল লক্ষণ
মাঝে মাঝে হাল্কা নাক ডাকাটা অনেক বিশেষজ্ঞের মতে স্বাভাবিক কিন্তু অস্বাভাবিকভাবে উচ্চস্বরে নাক ডাকানো যা হাঁপানো বা শ্বাসরোধের মতো শোনাচ্ছে তা স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ হতে পারে। যদি এমন হয় যে আপনি যখন ঘুমাচ্ছেন কয়েকবার সংক্ষিপ্ত মুহূর্তের জন্য শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং যার ফলে আপনার হার্টে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ হচ্ছে তবে এটাকে ও হার্টের সমস্যার লক্ষণ হিসেবে সম্ভাবনার মধ্যে রাখুন এবং ডাক্তারের সাথে আলাপ করুন।
আপনার মাঝে এই সমস্যা আছে কিনা তা আপনি ঘুমন্ত অবস্থায় ই পরীক্ষা করতে পারবেন তবে সেক্ষেত্রে আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য একটি CPAP মেশিনের প্রয়োজন হতে পারে।
অনিয়ন্ত্রিত ঘন ঘন কাশি
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এটি হার্টের সমস্যার লক্ষণ নয়। কিন্তু যদি আপনার হৃদরোগ থাকে বা আপনি জানেন যে আপনি ঝুঁকিতে আছেন, সম্ভাবনার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিন।
যদি আপনার দীর্ঘস্থায়ী কাশি থাকে যা সাদা বা গোলাপী শ্লেষ্মা তৈরি করে, তবে এটি হার্ট ফেইলারের লক্ষণ হতে পারে। এটি তখন ঘটে যখন হার্ট আপনার শরীরের কার্যক্ষমতা তৈরিতে ব্যর্থ হয় যার ফলে ফুসফুসে রক্ত বেরিয়ে যায়।আপনার কাশির কারণ কী তা পরীক্ষা করতে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
পা এবং গোড়ালি ফুলে যাওয়া
[ads4]
এটি একটি কারণ হতে পারে যে যদি আপনার হার্ট কার্যকরভাবে রক্ত সরবরাহে ব্যর্থ হয়। যখন হার্ট প্রয়োজনমতো পাম্প করতে পারে না তখন শিরাগুলিতে রক্ত ব্যাক আপ করে এবং ফুলে যাওয়া সৃষ্টি করে। হার্ট ফেইলিওর কিডনির জন্য শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি এবং সোডিয়াম অপসারণ করা কঠিন করে তোলে, যা ফুসকুড়ি হতে পারে।
অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, হার্ট দুর্বল হওয়ার কারণ
যখন আপনি দৌড়াবেন কিংবা উত্তেজিত হবেন এটি স্বাভাবিক যে আপনার হার্ট স্পন্দন তখন বেড়ে যাবে কিংবা যদি এমন হয় যে আপনি পরিশ্রম, দৌড়ানো কিংবা উত্তেজিত হওয়া ছাড়াই প্রায়শই আপনার অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হয় তবে হার্টের সমস্যার লক্ষণ হিসেবে এটাকে ও সম্ভাবনার মধ্যে রাখুন ।
মন্তব্য
[ads5]
আশাকরি উপরোক্ত ১০ টি লক্ষণ এর যেকোনো এক বা একাধিক ও আপনার কাছে থাকে তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্টারের সরণাপন্ন হবেন। হার্ট আপনার অনেক মূল্যবান সম্পদ । তবে শুধুমাত্র পোষ্টটি পড়েই ঘাবড়ানোর কিছু নেই। রিচার্স করুন, ডাক্তারের সাথে আলাপ করুন, আপনার সমস্যা ভালো করে বুঝিয়ে বলুন।
যদি চিকিৎসা না চাওয়া হয়, এই ধরণের হার্ট দুর্বল লক্ষণ গুলো আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ধরণের কার্ডিয়াক সমস্যা গুলো যে গতিতে অগ্রসর হবে তার গতি মাঝে মাঝে পরিবর্তিত হয়ে অস্বাভাবিক কিছু ও হয়ে যেতে পারে। তাই সাবধানতা অবলম্বন করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।
বিশ্বব্যাপী হ্রদ বিশেষজ্ঞদের তথ্যানুসারে ওয়েব রিসার্চ করে হার্টের সমস্যার লক্ষণ সম্বলিত এই পোষ্টে ১০ টি লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যদি আপনার কিংবা নিকটস্ত কারোর হার্টের সমস্যা থেকে থাকে তবে এই পোষ্টটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন এবং শেষে থাকছে প্রতিকার এর কিছু উপায় সহ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
সব হার্টের সমস্যা স্পষ্ট সতর্ক সংকেত নিয়ে আসে না। নাটক কিংবা চলচিত্রে কোনো অভিনেতাকে যেরকম দেখতে পান বিষয়টি সর্বদা সেরকম নয়। এটি কোনো প্রকার পূর্বসংকেত ছাড়াও আপনাকে ভীষণভাবে আক্রমণ করে শারীরিক ক্ষতি কিংবা মৃত্যুর জগতে নিয়ে যেতেও প্রস্তুত।
Penn State Hershey Heart and Vascular Institute কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশন ল্যাবরেটরির পরিচালক চার্লস চেম্বারস বলেন, “আপনি যদি নিশ্চিত না হন তবে এটি পরীক্ষা করে দেখুন।”
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র Vincent Bufalino বলেন, আপনার বয়স ৬০ বা তার বেশি হলে, অতিরিক্ত ওজন হলে, অথবা ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে এটি আপনার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সত্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে এবং তিনি এই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেন।
আশাকরি পোষ্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। স্বাস্থ বিষয়ক আমাদের আরও পোষ্ট পড়তে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন। এই পোষ্টটি পড়ে উপকৃত হলে নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেজবুক ফেজ এ লাইক দিয়ে পাশে থাকুন।