শিক্ষার্থীদের স্কুলের পাঠ্য সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত থাকায় নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ রচনা আকারে আমরা এই পোষ্টে লিপিবদ্ধ করেছি। বিস্তারিত শুরু হচ্ছে নিম্নে।
নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ
নারীশিক্ষার কথা যদি আমরা ভাবতে যায় তবে দুইটি জিনিস এখানে ওতপ্রোতভাবে উঠে আসে তা হলো “নারী” ও “শিক্ষা”। “নারী” শব্দটি দ্বারা মূলত সমস্ত নারী জাতিকে বুঝায়। আরেকটি হলো “শিক্ষা”। সাধারণভাবে বলা হয় শিক্ষা হলো কোনো কিছু জানা বা বিশেষ কোনো কিছুর দক্ষতা লাভ। শিক্ষা হলো একটি পদ্ধতি মাফিক ও জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া।আর নারী শিক্ষা হলো নারী সম্প্রদায়ের জ্ঞান অর্জনের পথ। নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ অথবা রচনা হিসেবে এই পোষ্টটি যথাযথ।
নারী হলো বিশ্বপ্রকৃতির প্রলয়লীলাই এক অস্ফুটিত বিজয় কলি। নারীর হাত ধরেই হোঁচট খাওয়া ছোট্ট শিশু উঠে দাঁড়াতে শিখে। আর নারীর আদলেই সেই অনুসারে সে জীবন সিঁড়ি চড়তে শিখে। এই দিনবদলের পাল্লাই প্রতিযোগিতার সভ্য সমাজে নারীশক্তিকে সহজেই ব্যাক্ত করা যায় আদ্যাশক্তি বলে। এই শক্তি তবেই আপনলীলায় আরো মহিমান্বিত হতে পারে যখন তার আলোর শহরের প্রবেশদ্বার জ্ঞানের দরজা উন্মুক্ত হয়ে যাবে। নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ ইতিপূর্বে আপনি পড়ে থাকলে নজরুলের ভাষায় এই উক্তিটি পড়েছেন-
“বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।”
নারী শিক্ষার গুরুত্ব শুধু অপরিসীম নয় নারীশিক্ষা অপরিহার্য। পৃথিবীর অর্ধেক জনগোষ্ঠীই নারী।আর এই অর্ধেকের অর্ধেক অংশ যদি অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে থাকে তবে সফলতার চূড়ান্ত শীর্ষের আলোর দেখা সম্ভবপর নয়। শিক্ষার মাধ্যমে একজন মানুষ পাই সম্পূর্ণ মানবিক গুণাবলী। এগিয়ে যাওয়ার সুদৃঢ় পথ নির্দেশনা। নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ এ মাহবুবুল হক এর এই উক্তি গ্রহণযোগ্য –
“No society has ever liberated itself economically politically or socially without a sound base of educated women”
জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণে তাই আমাদের পুরুষের মতো নারীদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়ার পথ দিতে হবে।নারীদের মনুষ্যত্ব বিকাশ ও উৎকৃষ্ট মানবী হয়ে গড়ে উঠতে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। প্লেটোর মতে –
“নারীর কাছ থেকে পুরুষের মতো কাজ আশা করলে তাকে অবশ্যই সমান শিক্ষা দিতে হবে। “
নারী শিক্ষার ভীত নড়বড়ে হলে সুদূরপ্রসারী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম লাভ দুর্লভ । নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ এ আরো বলতে হয় একটি আদর্শ জাতির সূচনা ঘটে একজন আদর্শ মায়ের আঁচল ধরে। যুগ যুগ ধরে সত্যকে অস্বীকার করা যায় না। মা যদি শিক্ষিত না হন তাহলে সন্তান সুশিক্ষার আলো পাবে না। আর এতেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্ধকারে আবৃত।যেমন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেন –
“তোমরা আমাকে শিক্ষিত মা দাও
আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দেবো। “
শুধু শিক্ষিত জাতি পেতে নয় আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণে নারী শিক্ষা পরিহার্য। নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ এর এই অংশে যা যা গুরুত্ব দেওয়া যায়:
নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে: নারীদের নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিতেও নারী শিক্ষা অপরিহার্য। শিক্ষার মাধ্যমে নারী নিজের শারীরিক আচরণ ও সুষ্ঠু জীবনব্যাবস্থা শিখতে পারে যা সর্বপ্রথম করণীয় সুষ্ঠু জীবন পরিকল্পনা হিসেবে।
আদর্শ পরিবার গঠন: একটি পরিবারের খুঁটি মা অথবা নারী।নারী যদি অশিক্ষিত হয় তবে একটি আদর্শ পরিবার কখনো গড়ে উঠে না।
অর্থনৈতিক অনগ্রসরতায় সহযোগিতা: যেখানে বিশ্বের অর্ধ শতাংশ নারী সেখানে অর্ধ শতাংশ নারী শিক্ষা নিশ্চিত মানে কর্মক্ষেত্রেও বিপুল দক্ষ জনশক্তির অংশগ্রহণের মাধ্যমে এক আমূল পরিবর্তন সাধন।
তাছাড়া ও শিক্ষার অভাবে নারীদের সুপ্ত প্রতিভার প্রকাশ ও বিকাশ দুটোই অসম্পূর্ণ।নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন নারীশিক্ষার মূল্য বুঝতে পেরে এক সেমিনারে তার মন্তব্য ব্যক্ত করেন এই বলে –
“নারী শিক্ষা একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রধান উপকরণ সমূহের একটি। “
যুগ যুগ ধরে গুনী ব্যক্তিরা ও উপলব্ধি করেছেন –
“পুরুষতান্ত্রিক শ্রেষ্ঠ শহীদের নাম মা।”
– [হুমায়ুন আজাদ]
নারী বিজয়া লক্ষী।নারীরও রয়েছে এক সুপ্ত অপ্রকাশিত আলোকপ্রদীপের মতো লুকায়িত রূপ যে আলোকপ্রদীপের জীবনীশক্তির চাবি হলো শিক্ষা। সভ্যতার চরম সাফল্যের যাত্রাপথে বহুমাত্রিক সুবিধার চূড়ান্ত ব্যবহারে নারী শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য অপরিহার্য। বাস্তব রূপ পাক নজরুলের সেই অনন্য বাণী –
“সেদিন সুদূর নয়
যেদিন ধরণী পুরুষের সাথে গাহিবে নারীরও জয়। “
আশাকরি উপরোক্ত নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। আরও পোষ্ট পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন।