উদাহরণসহ তন্তু থেকে সুতা তৈরির ধাপ
[ads3]
রেশম তন্তু থেকে সুতা তৈরির প্রবাহচিত্র অংকন
[ads4]
রেশম কীট বা রেশম পোকার জীবন চক্র চারটি পর্যায়ে ঘটে থাকে। এগুলো হলোঃ
- ডিম
- শূককীট
- মুক-কীট
- পূর্ণাঙ্গ পোকা।
প্রথম পর্যায়ঃ স্ত্রী পোকা0 পাতা বা কাগজের 0উপর ডিম পাড়ে। এরা একসাথে প্রায় 0৪০০-৫০০ ডিম পাড়ে। 0ডিম গুলো দেখতে ফ্যাকাসে 0হলুদের মত। ডিমগুলো 0দেখতে অনেকটা ইংরেজি C এর 0মত। ডিমগুলো ৭৮ 0– ৮৫ ডিগ্রী তাপমাত্রায় উত্তপ্ত 0হতে খাকে। ১০-১৪ 0দিন পর ডিম থেকে 0শূককীট উৎপন্ন হয়।
দ্বিতীয় পর্যায়ঃ শূককীট বড় 0হলে বাদামী লাল রঙের দেখায়। 0শূককীট চতুর্থবার খোলস বদলানোর পর 0মূককীটে পরিণত হতে শুরু 0করে। এ সময় এদের 0খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। 0শূককীট, মূককীটকে যে বাঁশের 0ডালায় গালা হয় তার নাম 0চন্দ্রকী। চন্দ্রকীতে অনেক গুলি 0কুঠুরি থাকে।
তৃতীয় পর্যায়ঃ শূককীট দেহের 0ভিতরে একটি লম্বা রেশম গ্রন্থি 0থাকে। গ্রন্থিতে থাকে 0এক প্রকার রস। নালী 0দিয়ে এ রস মুখের বাইরে 0আসে। নালীর নাম স্পিনারেট (0Spinneret)। বাতাসের সংস্পর্শে রস 0শক্ত হয়ে যায়। মূককীট মিনিটে 0৬৫ বার মুখ ঘুরিয়ে 0রস দিয়ে দেহের চারপাশে 0আবরণ তৈরি করে। এই 0রসকে সাধারণ কথায় মুখের 0লালা বলে। আবরণসহ মূককীটকে গুটি 0বলে। গুটির ইংরেজি নাম কুকুন 0(Cocoon)। গুটির মধ্যে 0মুককীটের অদ্ভুত রূপান্তর ঘটে। 0এই পরিবর্তনকে মেটামরফসিস (Metamorphosis0) বলে। মূককীট পরিবর্তিত 0হয়ে সুন্দর মথের রূপ ধারণ 0করে। মথই রেশম পোকার 0পূর্ণাঙ্গ অবস্থা।
চতুর্থ পর্যায়ঃ মথ হবার আগেই গুটিকে 0বাষ্প বা গরম জলে 0রাখতে হয়। না হলে 0মথ গুটি কেটে বেরিয়ে 0যায়। গুটি কেটে গেলে সুতা 0নষ্ট হয়ে যায়। 0গুটি গরম পানিতে পড়লে এর 0সুতোর জট খুলে যায়। 0একটি গুটিতে ৪০০–৫০০ গজ সুতা থাকে।
রেশমগুটি থেকে রেশম সুতা সংগ্রহ
[ads5]
রেশম 0উৎপাদন একটি অত্যন্ত জটিল 0প্রক্রিয়া। রেশমগুটি থেকে রেশম 0তৈরি করা হয়। 0রেশমগুটি আসলে রেশম মথের 0শুঁয়াপোকা; এদের একমাত্র খাদ্য 0তুঁতপাতা। রেশমকীট ডিম থেকে 0জন্মায় এবং গুটিতে রূপান্তরিত 0হওয়ার পর্যায় শেষ 0করে তারা রেশম মথ 0হিসেবে আবির্ভূত হয়। স্ত্রী 0মথ তখন কালচক্র পুনরায় 0শুরু করার জন্য ডিম পাড়ে। 0গুটিবদ্ধ অবস্থায় রেশম পিউপা 0বা কীটগুলিকে মেরে ফেলে 0সেগুলিকে সেদ্ধ করে সুতা 0ছাড়ানো হয় এবং পরে 0তা গোটানো হয়। 0এর এই সুতা বিভিন্ন 0ধরনের বস্ত্র তৈরির জন্য 0নানাভাবে প্রস্তুত করা 0হয়। শূককীট দশা শেষ 0করে রেশম পোকা তার 0খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে, 0দেহ নিঃসৃত লালা 0দিয়ে দেহকে আবৃত 0করে ফেলে এবং 0একটি ডিম্বাকৃতির গুটিতে পরিণত 0হয়। রেশম চাষীরা 0এই গুটি গরম পানিতে 0চুবিয়ে রেশমপোকা মেরে ফেলে। 0একই সাথে গরম পানির 0সংস্পর্শে গুটি নরম 0হয়ে আলগা হয়ে যায়। 0এই সময় চাষীরা যত্নের 0সাথে কাঠি দিয়ে রেশম 0সুতার একটি প্রান্ত বের করে 0আনে। এই প্রান্ত ধরে 0ধীরে ধীরে টেনে টেনে দীর্ঘ সুতা 0বের করে আনা হয়। এই 0সুতাকেই রেশম সুতা বলা হয়।0
রেশম সংরক্ষণঃ পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী ও পুরুষ 0মথ কোকুন থেকে বের হওয়ার 0পর পরই এরা প্রজনন 0করে। একটি পুরুষ মথ 0একদিনে ২-৩টি স্ত্রী মথের 0সাথে প্রজনন করে। প্রজননের পর 0স্ত্রী মথকে ছেড়ে দেয়ার 0অল্প সময় পরেই স্ত্রী 0মথ ডিম পাড়ে। একটি 0পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী মথ ২৪ ঘণ্টায় 0প্রায় ৬৫০টি ডিম পাড়ে। এই 0ডিম ফুটিয়ে আবার রেশম চাষ 0করা যায়।
রেশমের রোগ ও পোকাঃ রেশমে কটারোগ0, কালোশিরা, রসা, চুনা কাঠি 0ও স্বল্পরোগ হয়। উজি মাছি 0খুব ক্ষতিকর। এই পোকা 0ঘরে প্রবেশের সাথে সাথে মেরে 0ফেলতে হবে। রোগ ও 0পোকা দমনের জন্য সঠিক তাপমাত্রা 0ও আর্দ্রতা বজায় রাখা 0এবং সবকিছু শোধন করে 0কাজ 0করা।
পরিবেশের ভারসাম্যহীনতায় রাবার ও প্লাস্টিকের ভূমিকা
প্রযুত্তির উন্নতি 0ও জীবন যাত্রার মানের 0আধুনিকায়নের ফলে আমাদের জীবনের 0অপরিহার্য এক উপাদান হয়ে 0দাঁড়িয়েছে প্লাস্টিক। প্রতিনিয়ত 0আমরা ব্যবহার করছি প্লাস্টিক। 0প্লাস্টিকের বোতলে পানি খাওয়া, 0প্লাস্টিকের প্লেটে খাবার খাওয়া, 0প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করা। 0এছাড়াও প্রতিনিয়ত আমরা অবহেলায় 0রাস্তা ঘাটে , যেখানে 0সেখানে নিক্ষেপ করছি 0চিপস বা বিভিন্ন রকমের 0খাবারের প্যাকেট, বোতল0, পলিথিন, বিভিন্ন 0রকম পণ্যের মোড়ক।0
এসব ফেলে দেয়া 0প্লাস্টিকের একটি অংশের গন্তব্য 0হচ্ছে সমুদ্রে। এভাবে আমরা 0নিজেদের কি পরিমাণ বিপর্যয় যে 0ডেকে আনছি তা হয়ত আমরা 0নিজেরাও জানি না। চলুন 0আজ জেনে নেয়া যাক কিভাবে 0এই প্লাস্টিক আমাদের মানবদেহের 0, সামুদ্রিক প্রাণীদের তথা সমগ্র 0পৃথিবীর ক্ষতি করছে।
প্রথমেই আসি মানবদেহের 0ব্যপারে। প্লাস্টিকে এমন সব 0ক্ষতিকর উপাদান থাকে যা 0মানুষের শরীরের জন্য 0চরম ক্ষতিকারক। তাদের মধ্যে 0অন্যতম কিছু উপাদানের নাম ও 0প্রতিক্রিয়া নিচে উল্লেখ করা 0হলঃ
১। স্টাইরিনঃ প্লাস্টিকের প্যাকেজিং, ডিসপোজেবল 0কাপ (ওয়ানটাইম কাপ0) ও রাবার কনটেইনারে ব্যবহৃত 0স্টাইরিন নামক রাসায়নিক পদার্থটি 0মানব দেহে গেলে এক সময় 0তা থেকে ক্যান্সার ও 0লিউকেমিয়া হতে পারে। ডেইলি 0মেইল অন লাইনে গত ৩১ 0মে একটি গবেষণার সারসংক্ষেপ 0প্রকাশ করা হয়েছে।0
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানুষ 0স্টাইরিনের ছোঁয়ায় আসে পরিবেশ 0থেকে। আবার প্রিন্টার, 0ফটোকপিয়ারের সাথে যারা কাজ 0করে এবং সিগারেট পান 0করে তারাও স্টাইরিনের ক্ষতিকর প্রভাবে 0প্রভাবিত। গবেষণাটি 0হয়েছে ডেনমার্কে।
২0। পলিভিনাইল ক্লোরাইডঃ 0টেবিল ক্লথ, বেডিং 0এর কভার, মাংসের র্যাপার 0ইত্যাদিতে এ উপাদানটি থাকে। এতে শিশুদের 0হাঁপানি হতে পারে। তাদের রোগ 0প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে পারে। মহিলাদের 0বন্ধ্যত্ব দেখা দিতে পারে।
৩0। বিসাফেনলঃ অধিকাংশ প্লাস্টিক বোতলে এ যৌগটি 0থাকে । অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের 0জন্য এটি মারাত্মক 0ক্ষতিকারক। । 0অন্তঃসত্ত্বা মহিলার শরীরে 0এটি ঢুকলে শিশুর 0ওজন হ্রাসের সম্ভাবনা 0থাকে । শরীরে 0হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট 0করে। শিশুর মহিষ্কের 0বিকাশ রোধ করে।
৪। হাই ডেনসিটি 0পলিইথিলিনঃ পলিপ্যাক, প্রসাধানীর কনটেইনার0, দুধের বোতলে 0এ 0উপাদানের উপস্থিতি লক্ষণীয়। এতে স্ত্রী 0হরমোনের নিঃসরণ ও লক্ষণ বেড়ে 0যায়। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। 0শিশুশরীরে কোষের গঠন বদলে দেয়।0
৫। পলিইথিলিন টেরেফটালেটঃ প্লাস্টিক 0বোতলে এটি বেশি থাকে। 0এর থেকে অ্যান্টিমনি নিঃসৃত হয়। 0এটি স্ত্রী হরমোনের পরিমাণ 0ও লক্ষণ বাড়ায়। পুরুষ হরমোন 0নিঃসরণ কমায়। এছাড়াও পেটের অসুখ 0ও পাকস্থলীতে ক্ষত সৃষ্টি 0করতে এটি বিরাট ভূমিকা 0রাখে।এতো গেলো শুধুমাত্র মানুষের 0শরীরের ক্ষেত্রে । সামুদ্রিক 0প্রাণীদের জীবন আশংকায় প্লাস্টিক 0যে 0কত বড় ভূমিকা রাখছে তা 0হয়ত বলে বোঝানো সম্ভব 0না। প্রায় সাত 0বিলিয়ন মানুষের ব্যাবহার 0করা প্লাস্টিকের অনেকাংশেরই শেষ 0গন্তব্য 0হল সমুদ্র।
এক তথ্য অনুযায়ী ২০১৫ 0সাল নাগাত পৃথিবীতে মোট 0তৈরি করা প্লাস্টিকের পরিমাণ 0হল ৬.৩ বিলিয়ন। 0কিন্তু সবচেয়ে দুঃখের বিষয় 0হল এর মাঝে মাত্র 0৯ শতাংশকে পুনরায় ব্যাবহার 0উপযোগী করা হয়েছে, ১২ 0শতাংশকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এবং বাকি 0৭৯ শতাংশই পৃথিবীতে জমা 0থেকে গেছে ।0
সামুদ্রিক প্রাণীর একটি 0বড় অংশ সাধারণত খাদ্যের 0জন্য সমুদ্রে ভাসমান 0ক্ষুদ্র প্রাণিকণা (জুপ্ল্যাঙ্কটন0) এবং উদ্ভিদকণার (0ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন) উপর নির্ভরশীল0। গবেষণা অনুযায়ী দেখা 0যায়, সমুদ্রে এক পাউন্ড প্ল্যাঙ্কটনের 0(যেগুলো মাছসহ অন্যান্য সামুদ্রিক 0প্রাণীর খাদ্য) বিপরীতে ছয় পাউন্ড 0প্লাস্টিক বর্জ্য বিদ্যমান! আর 0এসব প্লাস্টিকের কারণে পানিতে জুপ্ল্যাঙ্কটন ও 0ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন উৎপাদনের পরিমাণ ক্রমশ কমছে।0
অন্যান্য দ্রব্য যেমন 0কিছুদিনের মাঝেই পচন ধরে কিন্তু 0প্লাস্টিকের বেলায় তা ব্যতিক্রম0। অণুজীব এদের সহজে 0পচাতে পারে না। ফলে 0বছরের পর বছর ধরে 0এরা সমুদ্রের 0পানিতে অবিকৃত অবস্থায় 0জমা হতে থাকে। তবে না 0পচলেও বিভিন্ন 0রকম প্রাকৃতিক কারণে এদের আকৃতি 0ক্রমশ ছোট হতে 0থাকে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এসব 0প্লাস্টিককে বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক 0। আর এরাই ক্ষতিটা 0করে সবচেয়ে বেশি।
প্ল্যাঙ্কটন সাইজের এই 0প্লাস্টিককণাকে সামুদ্রিক মাছেরা খাদ্য মনে করে 0ভুল করে ফেলে। খাদ্যের সাথে 0এই মাইক্রোপ্লাস্টিক কণিকা গুলো 0সামুদ্রিক প্রাণীর অভ্যন্তরে প্রবেশ 0করে। এর ফলে পরিপাক 0ও প্রজননের মত গুরুত্বপূর্ণকাজ বাঁধাগ্রস্ত 0হয়ে যায়। ফলে প্রাণীটি 0ধীরে ধীরে মারা যেতে 0থাকে । শুধু মাছই 0না। পাখিরা এবং অন্য সব 0সামুদ্রিক প্রাণীরাও এর বাইরে না। 0গবেষকরা প্রমাণ পেয়েছেন সামুদ্রিক কাছিমদের 0বেশিরভাগই প্লাস্টিক ব্যাগ এবং 0জেলিফিশের মধ্যে পার্থক্য করতে 0পারে না। ফলে তারা 0প্লাস্টিককে খাদ্য মনে 0করে খেয়ে ফেলে।
এছাড়াও সামুদ্রিক 0পাখিরাও শিকার হচ্ছে একই রকম 0বিপদের। এক সমীক্ষায় দেখা 0গেছে সমুদ্রে বিচরণকারী কোন 0কোন পাখির পাকস্থলীর ৮০% 0জায়গা প্লাস্টিক বর্জ্যে দখল করতে 0পারে বা করে থাকে! এগুলো হজম 0হয় না, যার ফলে আস্তে 0আস্তে পাখীগুলো না খেতে পেরে করুণভাবে 0মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। 0তবে এর মধ্য এলবাট্রোস এর 0মত বড় পাখিদের অবস্থা হল সবচেয়ে 0ভয়ানক। সমুদ্র এলাকায় থাকা 0এই সব পাখিদের সংখ্যা 0ক্রমেই কমছে। এদের মৃতদেহ 0বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় 0এই পাখিদের একটি বড় 0অংশ প্লাস্টিক দূষণের শিকার0। প্লাস্টিক যেভাবে ভয়ানকভাবে 0ক্ষতি করছে প্রাণিজগতের তা 0বলে শেষ করা যাবে 0না।
দশম শ্রেণির সকল অ্যাসাইনমেন্টের সমাধান পেতে এখানে চাপুন
[ads1]
দশম (১০ম) শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২২ (২য় সপ্তাহ)