বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভাষণ | মুজিব শতবর্ষ বক্তৃতা | শিশু দিবসের বক্তব্য
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ভাষণ | বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বক্তব্য ২০২২

আপনি যদি অনুসন্ধান করে থাকেন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভাষণ | মুজিব শতবর্ষ বক্তৃতা | শিশু দিবসের বক্তব্য তবে এখানে বিস্তারিত জানতে পারবেন। জন্মদিন সবার জীবনের অন্যতম একটি খুশির দিন। তাই এই দিনটি পালন করা হয় বিশেষ ভাবে। আর সে জন্মদিন হয় জাতীর জনকের তাহলে তো কথাই নেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতীর জনক।
১৭ মার্চ তার জন্মদিন৷ আপনিও একজন নেতা হলে তার জন্মদিনে কিভাবে ভাষণ দিবেন তা জেনে নিন।
Table of Contents
শুরু করবেন যেভাবে
আজকের সভায় উপস্থিত সকল সুধীবৃন্দকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। আজ যে বিশেষ কারণে আমরা এখানে সকলে একত্রিত হয়েছি তা হলো আমাদের জাতীর জনকের জন্মদিন। আজকে একি সাথে শিশু দিবসও৷ কারণ বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু শিশুর মত সারল্য নিয়ে জীবন যাপন করেছিলেন। আমার মত ক্ষুদ্র মানুষ এত বড় একজন মানুষের জন্মদিনে কিছু বলার সুযোগ পেয়েছি বলে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
তার জীবন নিয়ে বলবেন
বঙ্গবন্ধু ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ লুৎফুর এবং মাতা সায়েরা বেগম। বঙ্গবন্ধু ছোট বেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন৷ শিশু বয়সেই তিনি গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষদের কষ্টে কষ্ট অনুভব করতেন। তিনি অনেক সাহসী ছিলেন৷ এই সাহসে ভর করেই তিনি তার জীবন রাজনীতি এবং বাংলার মানুষের জন্যে বিসর্জন দেন। বঙ্গবন্ধু একাধারে একজন লেখক ও ভাষা সৈনিকও। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে তিনি সরাসরি যোগদান করেন এবং বন্দী হোন।
জেলে থাকা অবস্থায় তিনি অনশন পালন করেন। যা তিনি ১৪ দিন পর ভঙ্গ করেন। এমন দৃঢ় সংকল্প একজন মানুষের কথা আমি আর জীবনে শুনিনি।
তারপর রাজনৈতিক চেতনা নিয়ে বলবেন
বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন সৎ আর্দশবান রাজনৈতিক। কখনো নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করেন নি। সারাটা জীবন যৌবণ তিনি কাটিয়ে দিয়েছেন অনেকটা জেলে বসেই। ত্যাগ করেছিলেন পারিবারিক সুখ। সময় দিতে পারেন নি নিজের সন্তান, মা-বাবা ও স্ত্রীকে। বাঙালার জনগণের জন্যে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। তাই তো তিনি আজ আমাদের সকলের কাছে ভিষণ প্রিয় হয়ে আছেন। আজকে হাজারো তরুণ বঙ্গবন্ধুর আর্দশ বুকে নিয়ে দেশ চিন্তায় নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে। যা আমাদের মহান নেতা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গিয়েছেন।
শুধু দেশের মানুষের জন্যে বেঁচে থাকতে নয় মৃত্যুর মধ্য দিও তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন৷ তিনি মৃত্যুকে বরণ করেছেন বুক পেতে বীরের মত। ১৯৭৫ এর সেই ভয়াল রাতে চাইলে তিনি নিজের পরিবারকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারতেন। কোন ভাবে রক্ষা করতে পারতেন নিজের জীবন। কিন্তু তিনি বুঝেছিলেন দেশের কি হবে তাহলে! তাই তো নিজের একার কথা কখনো ভাবেন্নি।
আপনি পড়ছেন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ভাষণ সম্পর্কে। পাশাপাশি এই সম্পর্কিত আরো পোষ্ট পড়তে পারেন নিচে থেকে।
মুক্তিযুদ্ধের ডাক নিয়ে বলবেন
৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু ভাষণ দেন রেসকোর্স ময়দানে। যার মাধ্যমে তিনি ডাক দিয়েছিলেন বাঙালির মুক্তির। ডাক দিয়েছিলেন স্বাধীনতার। তার আহবানে বাঙালি আত্নবিশ্বাসী হয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে যার যা কিছু আছে তা নিয়েন। কারণ তিনিই বলেছিলেন “যার যা কিছু আছে তা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে”। আর এই আহবানেই উজ্জীবিত হয়েছিলো হাজারো তরুণ জনতা সর্বস্তরের মানুষ। যাদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীন। এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো যে নেতা আসলে বানানো যায় না। নেতা জন্মায়। তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ আমাদের জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ কেনোনা চিনি জন্মগত ভাবে নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছিলেন। তাইতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারিদের আন্দোলনে নেতার ভূমিকা পালন করেন৷ এর পর নানা ছাত্র আন্দোলনে যোগদান সহ নির্বাচিত হোন ১৯৫৪ এর নির্বাচনে। তখন তিনি ছিলেন মন্ত্রী।
কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কখনো ক্ষমতার লোভ ছিলো না। তাই তো তিনি তার বজ্রকণ্ঠের ডাকে সাড়া জাগিয়েছিলেন লক্ষ মানুষের। মুক্তির স্বাদ এনে দিয়েছিলেন বাঙালি জাতীকে। তারই জন্যে আমরা শিনাটান করে দাড়ানোর উৎসাহ পাই আজো৷ সাহস পাই নিজের ভেতরে।
বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী
বঙ্গবন্ধু আমাদের জন্যে কেবল একটি স্বাধীন দেশ নয় রেখে গেছেন তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। যার দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ মুখ দেখছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশের। যখন দেশ স্বাধীন হয়েছিলো তখন বঙ্গবন্ধু এক ভাষণে দুঃখ করেছিলেন ” সবাই পায় সোনার খনি,হীরার খনি আর আমি পেয়েছি চোরের খনি”। সেই চোরের খনি আজো দেশে বিদ্যমান। সেই চোরদের আমাদের নিজেদেরই উচ্ছেদ করতে হবে শক্ত হাতে। কারণ আমরা সবাই হতে চাই বঙ্গবন্ধুর আর্দশ উত্তরসূরী। তার আর্দশে নিজেদের জীবনকে গড়তে হবে।
কখনো কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়ানো যাবেনা। আমাদের বঙ্গবন্ধু যেখানেই অন্যায় দেখতেন তিব্র প্রতিবাদ করতেন। কাউকে তোয়াক্কা করতেন না। এবং কি পাকিস্তান সরকারের মামলা হামলা, রাইফেলের ভয়ও তাকে পিছ পা করতে পারেনি। তেমনি আমরাও এমন দুঃসাহসিক হবো।
রাজনৈতিক আর্দশ
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আর্দশ ছিল গরিব দুঃখীদের পাশে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের জন্যে কাজ করা। তাদের অধিকার আদায় করা। তাদের অধিকার আদায় করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। তেমন আমরা যারা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকি আমাদের জীবনের আর্দশ হবে তার মতই সাধারণ মানুষের জন্যে রাজনীতি করা। আর এই পথে যত বাঁধাই আসুক না কেনো ভয় না পাওয়া। বুক ফুলিয়ে তা প্রতিহত করা।
পৃথিবীতে সব থেকে বেশি বদনাম বোধহয় রাজনীতি যারা করে তাদেরই হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এমন একজন মানুষ ছিলেন যার নামে কোন বদনাম নেই। সবাই তাকে শ্রদ্ধা করে ও মন থেকে ভালোবাসে। আমরাও এমন ভাবে সৎ থেকে রাজনীতি করব যাতে কেউ কোন দিন আমাদের ঘৃণার চোখে দেখতে না পারে। হ্যাঁ কিছু সমালোচনা থাকবেই। কেনোনা ভালো কাজে বাঁধা আসেই। বাঁধা না থাকলে সেই কাজকে কখনো ভালো বলা যায় না।
শেষ কথা যা বলবেন
বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্নজীবনী আমাদের সবার পড়া উচিত। বিশেষ করে যারা রাজনীতির সাথে আমরা আছি এটা আমাদের জন্যে আর্দশ একটি অনুকরণীয় বই। এখান থেকে আমরা একজন বঙ্গবন্ধুকে দেখি যাকে অনুসরণ না করে উপায় নাই। তাই এমন একজন সাহসী আর্শবান নেতার অনুসারী হতে দ্বিধা করা উচিত নয়। আমি নিজেও উনার মত হতে চেয়েছি সারাজীবন, হয় তো উনার মত বড় মাপের কিছু হতে পারিনি কিন্তু উনার আর্দশকে বুকে ধারণ করেছি বলে আমি গর্বিত বোধ করি। সবাই আমার জন্যে দোয়া রাখবেন যাতে আমি প্রকৃতপক্ষেই বঙ্গবন্ধু যোগ্য অনুসারী হতে পারি। দেশের জন্যে, জাতির জন্যে কাজ করতে পারি। সবাই ভালো থাকবেন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। সবাইকে মুজিবীয় শুভেচ্ছা। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
আমাদের কথা
কি অবস্থা ! আশাকরি আপনার কাঙ্খিত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভাষণ | মুজিব শতবর্ষ বক্তৃতা | শিশু দিবসের বক্তব্য এখানে খুঁজে পেয়েছেন। পোষ্টটা কেমন লাগলো তা কমেন্ট বক্সে জানিয়ে যেতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ আপনার অনুসন্ধানের জন্য।