ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেতন কত ২০২৩

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেতন কত ২০২৩- আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আবারো হাজির হয়ে গেল আপনাদের সামনে নতুন একটি টিউটোরিয়াল নিয়ে। আজকে আপনাদের সামনে মূলত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বেতন কত ২০২২ অথবা ২০২১,ইউপি মেম্বারদের বেতন কত ও মহিলা মেম্বারের বেতন কত ২০২২ সম্পর্কে ও আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তাই যে সকল বন্ধুগণ এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন। তারা অবশ্যই আজকের আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বেতন কত ২০২৩

আমরা সবাই মনে করি,ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসে অনেক টাকা বেতন পায়। কিন্তু সত্যিকার অর্থে একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাসিক বেতন খুবই সামান্য। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে মহিলা মেম্বার ও মেম্বার এর বেতন তুলনামূলকভাবে অনেক কম। চলুন দেখে নেই,ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেতন মাসিক কত টাকা।
স্থানীয় সরকার ,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ০৯/০৮/২০১৭ ইং তারিখের আদেশ মতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার ম্যান ও অন্যান্য সদস্যগণের সম্মানীভাতা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে একই বছরে তা কার্যকর করা হয়।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেতন হিসেবে সরকারী অংশ থেকে ৪৫০০ টাকা ও ইউপি অংশ থেকে ৫৫০০ টাকা সর্বমোট ১০,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
আপনি হয়তো বিশ্বাস করতে পারছেন না একজন ইউনিয়ন পরিষদের যে প্রধান তার বেতন মাত্র ১০ হাজার টাকা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেতন ১০ হাজার টাকা।  আশাকরি উক্ত আলোচনা থেকে আপনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেতন কত ২০২২ সম্পর্কে আমাদের সাইটে এসে সম্যক ধারণা পেতে সক্ষম হয়েছেন। চলুন তবে বাকীদের সম্পর্কেও সংক্ষিপ্ত আকারে জেনে নেওয়া যাক।

বাংলাদেশের মহিলা মেম্বারের বেতন কত ২০২৩

আমরা সবাই জানি একটি ইউনিয়ন পরিষদে মোট তিনটি মহিলা সংরক্ষিত আসন থাকে। অর্থাৎ একটি ইউনিয়ন পরিষদের মোট তিন জন মহিলা মেম্বার থাকে। আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে মহিলা মেম্বারের বেতন কত টাকা। আসুন দেখে নেই একজন ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার মাসিক কত টাকা বেতন পায়।
স্থানীয় সরকার ,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ০৯/০৮/২০১৭ ইং তারিখের আদেশ মতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার ম্যান ও অন্যান্য সদস্যগণের সম্মানীভাতা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে একই বছরে তা কার্যকর করা হয়। এই আদেশ অনুযায়ী একজন মহিলা মেম্বার এর বেতন সরকারী অংশ ৩৬০০ টাকা ও ইউপি অংশ ৪৪০০ টাকা সর্বমোট ৮,০০০-টাকা।

ইউপি মেম্বারদের বেতন কত

ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বারের বেতন ও অন্যান্য মেম্বারদের বেতন মূলত একই নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার ,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ০৯/০৮/২০১৭ ইং তারিখের আদেশ মতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার ম্যান ও অন্যান্য সদস্যগণের সম্মানীভাতা নির্ধারণ করা হয়। এই অনুসারে ইউপি মেম্বারের বেতন সরকারী অংশ ৩৬০০ টাকা ও ইউপি অংশ ৪৪০০ টাকা সহ সর্বমোট ৮,০০০ টাকা। পূর্বের অনুচ্ছেদে আপনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেতন কত ২০২২ এ সম্পর্কেও দেখে নিয়েছেন। 

গ্রাম পুলিশের নতুন বেতন কত ২০২৩

বর্তমান সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারের বেতন নতুন স্কেলে মাসিক ৬ হাজার টাকা। এছাড়াও একজন চৌকিদার ইউনিয়ন পরিষদের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে।

ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের বেতন কত

প্রত্যেকটা ইউনিয়ন পরিষদের একজন করে সচিব নিয়োগ প্রাপ্ত হয়। বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের ১৪তম গ্রেডে রাখা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের বেতন ১০২০০ – ২৪৬৮০ টাকা।

ইউনিয়ন পরিষদের আয়ের উৎস কয়টি

আমাদের মনে ভুল ধারণা আছে পরিষদের আয়ের উৎস অনেকগুলো। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের আয়ের উৎস ১) বাড়িঘর, দালান-কোঠার ওপর কর ২) লাইসেন্স, পারমিট ফি। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের আয়ের নিজস্ব উৎসের মধ্যে আছে কর, রেট এবং ফি। এর বাইরে পরিষদ প্রতি বছর সরকার থেকে অনুদান পায়। চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্য এবং এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করে কর, রেট ও ফি ইত্যাদি ধার্য করেন। রাজস্ব আদায়ের জন্য চেয়ারম্যান আদায়কারী নিয়োগ ও তার কাজের দেখাশুনা করেন।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এর বেতন সংক্রান্ত কিছু কথা

আমরা সবাই জানি ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাহলে একজন চেয়ারম্যান ওমেম্বার সর্বোচ্চ পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারে। উপরে উল্লেখিত হিসাব অনুযায়ী একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ৫ বছরে মোট বেতন পাবেন ৬ লক্ষ টাকা এবং একজন মহিলা মেম্বার ও ওয়ার্ড মেম্বার ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা মাত্র। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেতন কত ২০২২ এ সম্পর্কে জেনেছেন পূর্বে তো আপনি জেনেছেন ই।
একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন নির্বাচন করতে গিয়ে ৫০-৯০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করে থাকে। কারণ অধিকাংশ ভোটারদের মনের কথা হলো, যে প্রার্থী আমাকে বেশি টাকা দিবে আমি তাকেই ভোট প্রদান করবো। এটাই মূলত বর্তমান সময়ে ভোটারদের অভ্যাস। তাহলে এখন কথা হলো একজন চেয়ারম্যান ৫ বছরে বেতন পাবেন ৬ লক্ষ টাকা, আর সেই চেয়ারম্যান ইউপি নির্বাচনে ব্যয় হয় আনুমানিক ৬০ লক্ষ টাকা। তাহলে বাকি ৫৪ লক্ষ টাকা কোথায় পাবে।
অর্থাৎ তার নির্বাচনে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। সে পাঁচ বছরের বেতন পাবে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। তাহলে বাকি ৪৪ লক্ষ টাকা একজন চেয়ারম্যান কিভাবে উত্তোলন করবে। এই প্রশ্নটা আমাদের মাথায় সব সময় ঘুরপাক খায়। আপনার মাথায় যদি এরকম কোন চিন্তা ঘুরপাক খেয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই আপনাকে সচেতন একজন নাগরিক হতে হবে।
তাই আমাদের যে আমাকে বেশি টাকা দিতে পারবে বা বেশি চা, পান ইত্যাদি খাওয়াতে পারবে আমি তাকে ভোট দিবো এই চিন্তা ভাবনা বাদ দিতে হবে। এখন থেকে চিন্তা করতে আমি তাকেই ভোট দিবো,যে জনগণের সেবা করার জন্য রাজনীতি করে সৎ ও যোগ্য একজন প্রার্থী। অর্থাৎ আপনাকে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী দেখে ভোট দিতে হবে।
তাই এখন থেকে এই স্লোগান দেই, ভোটের বিনিময়ে কারো কাছ থেকে টাকা বা অন্য কিছু নয়, আমি ভোট পরবর্তী পাঁচ বছর শতভাগ সেবা চাই।
আপনি যদি নির্বাচন চলাকালীন কোন চেয়ারম্যান প্রার্থী বা মেম্বার প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে। তাহলে পরবর্তীতে সেই চেয়ারম্যান পারতে চেয়ারম্যান হওয়ার পর অবশ্যই আপনার কোন কাজের বিনিময়ে তাকে অবশ্যই কিছু ঘুষ দিতে হবে। আপনি যদি দুর্নীতিবাজ হন তাহলে আপনার চেয়ারম্যান হবে দুর্নীতিবাজ। এখন সিদ্ধান্ত আপনার হাতে। আশা করি,একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমরা এই সকল দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করব।

আমাদের শেষ কথা

আশা করি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেতন কত ২০২৩ সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যানের বেতন অনেক কম। এছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের বেতন চেয়ারম্যানের থেকে তুলনামূলকভাবে একটু কম।
যেহেতু একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ ৬ লক্ষ টাকা বেতন পায়। সেক্ষেত্রে তার নির্বাচনের টাকাও অর্ধেক উঠে আসে না। তাই এমন অনেক চেয়ারম্যান রয়েছে যারা দুর্নীতি করে তাদের টাকাগুলো উঠিয়ে নেয়। এই দুর্নীতি থেকে আমাদের দেশকে মুক্ত করার জন্য আমরা অবশ্যই নির্বাচনকালীন সময়ে কোন প্রার্থীর থেকে টাকা নেব না। তাহলে একজন চেয়ারম্যান কখনোই আমাদের সঙ্গে দুর্নীতি করতে পারবে না।